হরেক রকম মিষ্টির আয়োজন

রসনা বিলাস খ্যাত বাঙালি মাত্রই যেকোনো খাবারের পর একটু মিষ্টি চেখে দেখা চাই। খাবার যাই হোক না কেন খাবার শেষে যদি পাওয়া যায় একটুখানি মিষ্টি তবে খাবার যেন পায় পূর্ণতা। রান্নাঘরের আজকের আয়োজন নানান ধরণের মিষ্টি। গৃহিণীরা নিজেদের রান্নাঘরেই তৈরি করতে পারেন মিষ্টিগুলো। দেখে নিন কিভাবে খুব সহজে তৈরি করবেন রেসিপিগুলো।

 

 

 

টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম

চমচম ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর

 

উপকরন
  • ছানা ১ কাপ
  • ময়দা ১ চা চামচ
  • সুজি ১ চা চামচ
  • চিনি ১ চা চামচ

সিরার জন্য     

  • চিনি ২ কাপ
  • পানি ৪ কাপ
  • দারুচিনি ১ টুকরা
  • এলাচ ১ টুকরা

 

নির্দেশনা

১। প্রথমে ছানার সাথে ময়দা, সুজি এবং চিনি মিশিয়ে নিন।

২। ছানা ১০ মিনিট ধরে ভাল করে মাখুন।এই মাখানোর উপর মিষ্টি নির্ভর করে।ছানা মাখানো যত ভাল হবে মিষ্টি তত সুন্দর হবে,মিষ্টি ফাটবারও কোনও সম্ভাবনা থাকবেনা। আবার অতিরিক্ত সময় ধরে মাখবেন না। মাখতে মাখতে হাত তেলতেলে হয়ে গেলেই বুঝবেন আর ছানা মাখার দরকার নেই।

৩। ছানা ৮ ভাগ করুন।প্রতিটি ভাগকে গোল গোল বল বানিয়ে হাতের সাহায্যে লম্বাটে শেপ দিন।

৪। হাঁড়িতে সিরার সব উপকরণ নিয়ে চুলায় জ্বাল দিন, সিরায় একবার বলক আসলে মিষ্টিগুলো সব একসাথে সিরায় ছেড়ে দিন।হাঁড়ির ঢাকনা দিয়ে দিন।

৫। চুলার আঁচ মাঝারি রাখুন।আধা ঘণ্টা পর ঢাকনা তুলে ১ কাপ গরম পানি যোগ করুন।খেয়াল  রাখুন সিরা যাতে ঘন না হয়ে যায়।

৬। মাঝারি আঁচে আরও ১ ঘণ্টা জ্বাল দিন।সবসময় সিরার দিকে খেয়াল রাখুন সিরা যাতে ঘন না হয়ে যায়।

৭। সিরা ঘন হয়ে গেলে আবার অল্প করে পানি যোগ করুন।আরও দেড় ঘণ্টা মাঝারি আঁচে জ্বাল রাখুন।সিরা বেশি ঘন হয়ে গেলেই অল্প করে পানি দিতে থাকুন।

৮। মোট তিন ঘণ্টায় চমচম তৈরি হয়ে যাবে।

৯। ৩ ঘণ্টা পর চুলা বন্ধ করে চমচম এভাবেই সিরাতে রেখে দিন পুরোপুরি ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত।

১০। এরপর সিরা থেকে চমচম তুলে মাওয়ায় গড়িয়ে নিন।এবার পরিবেশন করুন মজাদার পোড়াবাড়ির চমচম।

 

নোট

*** চমচম বানাতে গেলে ৩ ঘণ্টা জ্বাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এর কম সময় জ্বাল করলে আসল চমচমের সেই টেক্সচার আসবেনা ***

*** কেউ যদি এত সময় ধরে জ্বাল করতে না চান তাহলে চিনি ক্যারামেল করে সিরায় যোগ করতে পারেন এতে চমচমের গাড় বাদামি কালার আসবে।এক্ষেত্রে চমচম দেড় ঘণ্টা জ্বালেই তৈরি হয়ে যাবে।***

 

 

রসমালাই

রসমালাই ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর
উপকরন
  • দুধ ১ লিটার
  • টক দই ১ কাপ (ছানা বানানোর জন্য)***
  • ময়দা ১ চা চামচ

সিরার জন্য

  • চিনি ২ কাপ
  • পানি ৫ কাপ
  • দারচিনি, এলাচ ১ টি করে

মালাইর জন্য

  • দুধ ১ লিটার
  • চিনি ৩ টেবিল চামচ বা স্বাদমত
  • এলাচ ১ টি
নির্দেশনা

১। চুলায় দুধ জ্বাল দিন। ঘন ঘন নাড়ুন যাতে হাঁড়ির নিচে দুধ না লেগে যায়। দুধে ভালোভাবে বলক আসলে চুলা বন্ধ করে টক দই দিয়ে দিন। এখন সব ভালো করে নেড়ে দিন।

২। দুধ ফেটে ছানা ও পানি আলাদা হয়ে গেলে চুলা থেকে পাত্র নামিয়ে নিয়ে ঝাঁজরির উপর পরিস্কার সুতি কাপড় রেখে দ্রুত ছানা ছেঁকে ফেলুন।

৩। এবার ছানা ভালো করে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে সুতি কাপড় হালকা চেপে যতটুকু সম্ভব ছানা থেকে পানি ঝরিয়ে নিন। এরপর কাপড়ে ছানা বেঁধে ৩/৪ ঘণ্টা বাতাসে ঝুলিয়ে রাখুন। ৩/৪ ঘণ্টা পর ছানা থেকে সমস্ত পানি ঝরে গেলেই ছানা ব্যাবহার উপযোগী হবে।

৪। এরপর সিরা তৈরির জন্য প্রথমে পাত্রে সিরার সব উপকরন নিয়ে জ্বাল দিন। সিরায় একবার বলক এলে চুলা বন্ধ করে দিন।

৫। আলাদা প্লেটে ছানার সাথে ময়দা মিশিয়ে ২-৩ মিনিট মেখে নিন। এবার ছানা ছোট ছোট ভাগ করে হাতের সাহায্যে রস মালাইএর আকারে গড়ে নিন।

৬। এখন সবগুলো মিষ্টি একসাথে গরম সিরার মধ্যে ছেড়ে আবার চুলা জ্বালিয়ে দিন। জ্বাল দেয়ার পুরোটা সময় হাড়ির মুখ ঢেকে রাখবেন।

৭। চুলার আঁচ প্রথম ৮ মিনিট বাড়িয়ে রাখবেন। পরের ১৫ মিনিট আঁচ মাঝারি রেখে মিষ্টিগুলো জ্বাল করবেন। এই সময়ের মধ্যেই মিষ্টিগুলো ফুলে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

৮। এরপর চুলা থেকে হাঁড়ি নামিয়ে নিন। মিষ্টিগুলো সিরার মধ্যে এভাবেই ঢেকে রেখে দিন পুরোপুরি ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত।

৯। সিরা পুরোপুরি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে মিষ্টিগুলো ঝাঁজরিতে ঢেলে সব সিরা ঝরিয়ে নিন।

১০। এবার মালাই তৈরি করা শুরু করুন। প্রথমে প্যানে দুধ নিয়ে জ্বাল দিন। চুলার আঁচ মাঝারি রেখে দুধ জ্বাল দিয়ে ১ লিটার দুধ ঘন করে অর্ধেকের কম করে ফেলুন। এরপর দুধে চিনি দিয়ে দিন। চিনি দেয়ার পর আরও কিছুক্ষন দুধ জ্বাল দিয়ে এরপর এতে মিষ্টিগুলো ঢেলে দিন।

১১। ঘন দুধে মিষ্টিগুলো দেয়ার পর চুলায় মোট ১ মিনিট জ্বাল দিন। ১ মিনিট পর পাত্র চুলা থেকে নামিয়ে এর মধ্যে ১ টি এলাচ দিয়ে পাত্র ঢেকে রেখে দিন ৭-৮ ঘণ্টা। এরপর পরিবেশন করুন মজাদার রসমালাই।

 

নোটঃ

*** ছানা তৈরির জন্য টক দই না দিতে চাইলে সেক্ষেত্রে ৪ টেবিল চামচ লেবুর রস দিয়েও ছানা তৈরি করতে পারবেন। তবে রসমালাই তৈরির ক্ষেত্রে লেবু বা সিরকা দিয়ে ছানা না করে টক দই দিয়ে ছানা করলে রসমালাইটা অনেক সুন্দর হয়। ***

*** মিষ্টি তৈরিতে ছানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খেয়াল রাখবেন ছানায় যাতে কোন পানি না থাকে। ***

*** মিষ্টির সিরা ঘন থাকা যাবেনা না। সিরা ঘন থাকলে মিষ্টি শক্ত হয়ে যাবে। এই মিষ্টির সিরা প্রথম থেকেই পাতলা থাকতে হবে। ***

 

 

জাফরানি মালাই চপ

জাফরানি মালাই চপ ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর
উপকরন
  • ছানা ১ কাপ
  • চিনি ১ চা চামচ
  • ময়দা ১ চা চামচ

সিরার জন্য

  • চিনি ১ কাপ
  • দারুচিনি,এলাচ ২ টুকরা করে
  • পানি ৪ কাপ

মালাইর জন্য

  • দুধ ১/২ লিটার
  • কনডেন্স মিল্ক ৫-৬ টেবিল চামচ/স্বাদমত(না থাকলে চিনি দিলেও হবে)
  • জাফরান সামান্য
  • এলাচ ১ টি

 

নির্দেশনা

১। হাঁড়িতে সিরার সব উপকরন নিয়ে জ্বাল দিন। ফুটে উঠলে চুলা বন্ধ করে দিন।

২। ছানার সাথে চিনি এবং ময়দা মিশিয়ে ভালকরে মাখুন ১০ মিনিটের মত।

৩। এবার ছানা ১০ ভাগ করে হাতের সাহায্যে চপের আকারে গড়ে নিন।

৪। এখন সবগুলো মিষ্টি একসাথে গরম সিরার মধ্যে ছেড়ে আবার চুলা জ্বালিয়ে দিন। জ্বাল দেয়ার পুরোটা সময় হাড়ির মুখ ঢেকে রাখবেন।

৫। চুলার আঁচ প্রথম ১০ মিনিট বাড়িয়ে রাখবেন। পরের ১০ মিনিট জ্বাল কমিয়ে দিবেন। এই ২০ মিনিটে মিষ্টি ফুলে দ্বিগুণ হয়ে যাবে।

৬। ২০ মিনিট পর চুলা থেকে হাঁড়ি নামিয়ে নিন। এভাবেই ঢেকে রেখে দিন সিরা পুরোপুরি ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত।

৭। সিরা পুরোপুরি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে মিষ্টিগুলো সিরা থেকে আলাদা একটি বাটিতে তুলে রাখুন। মিষ্টিতে কোন সিরার পানি থাকা যাবেনা।

৮। এবার মালাই তৈরি করা শুরু করুন। প্রথমে প্যানে দুধ, জাফরান, এলাচ ও কনডেন্স মিল্ক মিশিয়ে চুলায় জ্বাল দিন। ১/২ লিটার দুধ জ্বাল দিতে দিতে ঘন করে অর্ধেক করে ফেলুন।

৯। দুধ ঘন হয়ে গেলে এর মধ্যে মিষ্টিগুলো দিয়ে ১ মিনিট জ্বাল দিন। এরপর পাত্র চুলা থেকে নামিয়ে ঢেকে রেখে দিন ৭-৮ ঘণ্টা। এরপর পরিবেশন করুন।

নোটঃ

** মিষ্টি তৈরিতে ছানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ছানায় কোন পানি থাকা যাবেনা। ছানা বেশ সময় ধরে মাখাতে হবে। ছানা মাখতে মাখতে যখন হাত একটু তেলতেলে হওয়া শুরু হবে তখনি ছানা মাখা বন্ধ করে দিবেন। ছানার তেল বের হয়ে গেলেও মিষ্টি শক্ত হতে পারে।**

**সিরা ঘন থাকা যাবেনা না। সিরা ঘন থাকলে মিষ্টি শক্ত হয়ে যাবে। এই মিষ্টির সিরা প্রথম থেকেই পাতলা থাকতে হবে।**

**কনডেন্স মিল্ক বা চিনি প্রথমেই সব দিয়ে দিবেননা। সবার মিষ্টি খাবার অভ্যাস সমান থাকেনা এজন্য প্রথমে অল্প পরিমানে কনডেন্স মিল্ক দিয়ে পরে লাগলে আরও একটু যোগ করবেন।**

ছানার কালোজাম

ছানার কালোজাম ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর

 

উপকরন
  • ছানা ১ কাপ
  • ঘি ২ টেবিল চামচ
  • গুঁড়াদুধ ১/২ কাপ
  • ময়দা ৩ টেবিল চামচ
  • চিনি ১ টেবিল চামচ
  • বেকিং পাউডার ১/৮ চা চামচ
  • ফুড কালার সামান্য

সিরার জন্য

  • চিনি ২ কাপ
  • পানি ৪ কাপ
  • দারচিনি ১ টুকরা
  • এলাচ ১ টি
নির্দেশনা

১। প্রথমে পাত্রে সিরার সব উপকরন নিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন। সিরা একবার ফুটে উঠলে চুলা বন্ধ করে দিন।

২। এবার আলাদা প্লেটে মিষ্টির শুকনা সব উপকরণ যেমন গুঁড়াদুধ, ময়দা, চিনি, বেকিং পাউডার একসাথে মিশিয়ে নিন। এরপর এই শুকনা উপকরণের সাথে ছানা, ঘি, এবং ফুড কালার মেখে নিন। ছানার মিশ্রণটি বেশি মাখার দরকার নেই। হালকা মেখে সব মিশিয়ে নিলেই হবে।

৩। চুলায় পরিমানমত তেল গরম হতে দিয়ে এখন এই মিশ্রণ থেকে অল্প অল্প নিয়ে লম্বা মিষ্টির আকারে গড়ে নিন।

৪। তেল গরম হলে চুলার আঁচ কমিয়ে দিন। তেল মাঝারী গরম হবে, খুব বেশী গরমও না আবার অল্প গরমও না। এরপর মিষ্টিগুলো অল্প আঁচে ভেঁজে নিন।

৫। মিষ্টিগুলো গাঁড় বাদামী কালার হলে তেল থেকে তুলে আলাদা প্লেটে রাখুন।

৬। এখন এই ভেঁজে রাখা মিষ্টিগুলো আগে থেকে তৈরি করে রাখা গরম সিরার মধ্যে দিয়ে চুলায় ৪-৫ মিনিট জ্বাল দিন। এরপর চুলা বন্ধ করে দিয়ে মিষ্টিগুলো ঢেকে রেখে দিন হালকা ঠাণ্ডা হওয়া পর্যন্ত।

৭। মিষ্টি ঠাণ্ডা হয়ে গেলে সিরা থেকে ছেঁকে তুলে মাওয়ায় গড়িয়ে নিয়ে পরিবেশন করুন।

গুঁড়াদুধের গোলাপজাম

গুঁড়াদুধের গোলাপজাম ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর

 

উপকরন
  • গুঁড়াদুধ  ১/৪ কাপ+২ টেবিল চামচ
  • ময়দা ১/৪ কাপ
  • বেকিং পাউডার ১ চা চামচ
  • চিনি ১ চা চামচ
  • ঘি/তেল ১ টেবিল চামচ
  • তরল দুধ ১ চা চামচ
  • ডিম ২ টেবিল চামচ(১ টা ডিম ফেটে তার থেকে ২ টেবিল চামচ নিতে হবে)
  • তেল পরিমানমত (ভাজার জন্য)

সিরার জন্য

  • চিনি ২ কাপ
  • পানি ২ কাপ
  • দারুচিনি ১ টুকরা
  • এলাচ ১ টি

 

নির্দেশনা 

১। প্রথমে হাড়িতে সিরার সব উপকরন মিশিয়ে সিরা তৈরি করে নিন। সিরা ঘন করবেননা। চিনি গলে গেলেই চুলা বন্ধ করে হাড়ি চুলার উপরেই রেখে দিন।

২। এখন গুঁড়াদুধ, ময়দা, বেকিং পাউডার একসাথে মিশিয়ে নিন।

৩। একটি ডিম ফেটে এর থেকে ২ টেবিল চামচ নিন। ২ টেবিল চামচ ডিমের সাথে চিনি, ঘি এবং তরল দুধ মিশিয়ে গুঁড়াদুধের মিশ্রণে ঢেলে দিন।

৪। ভালকরে হাতের সাহায্যে মেখে নিন। মিশ্রণটা বেশ আঠালো হবে। মিষ্টি গোল করার আগে হাত পরিষ্কার করে হাতে ভালকরে ঘি মেখে নিন। এতে মিষ্টি গোল করতে সুবিধা হবে।

৫। মিষ্টি তৈরি করার আগে অল্প আঁচে চুলায় তেল গরম দিন।

৬। এখন খামির ১০ থেকে ১২ ভাগ করে হাতের সাহায্যে গোল করে নিন।

৭। মিষ্টি গোল করা হয়ে গেলে তেল পরীক্ষা করে দেখুন। তেল একেবারে বেশি গরম হবেনা। তেল এমন হতে হবে যে মিষ্টিগুলো তেলে ছাড়ার সাথে সাথে যেন দ্রুত ভাজা না হয়ে যায়।

৮। অল্প আঁচে আস্তে আস্তে সময় নিয়ে মিষ্টিগুলো গাড় বাদামি করে ভাজুন।একসাথে অনেকগুলো মিষ্টি তেলে ছাড়বেননা এতে একটার গায়ে আরেকটা লেগে মিষ্টি ভেঙ্গে যাবার সম্ভাবনা থাকে।

৯। মিষ্টি ভাজা হয়ে গেলে সাথে সাথে মিষ্টি তুলে সিরায় ছেড়ে দিন। মিষ্টিগুলো এভাবেই সিরার মধ্যে রেখে দিন সারারাত বা ৭/৮ ঘণ্টা। এতে মিষ্টির মধ্যে সিরা ঢুকে মিষ্টির আকার দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এবার পরিবেশন করুন তুলতুলে গোলাপজাম।

 

নোট

** এই মিষ্টির সবথেকে ট্রিকি পার্ট হল খামির। মিষ্টির খামির এত আঠাল হয় যে এটা সহজে গোল করা যায়না। এজন্য মিষ্টি গোল করার আগে ৮-১০ মিনিট খামির ফ্রিজে রেখে দিবেন। এতে খামির সামান্য জমে যাবে। এবার হাতে বেশিকরে ঘি মেখে মিষ্টি গোল করা শুরু করবেন। সব গোল করা হয়ে গেলে তেলে ছাড়ার আগে আরও একবার হাতের সাহায্যে গোল করে তারপর তেলে ছাড়বেন। **

 

 

রসগোল্লা

রসগোল্লা ফারহানা সুমাইয়া | রান্না ঘর

 

উপকরন
  • দুধ ১ ১/৪ লিটার
  • লেবুর রস ৪-৫ টেবিল চামচ
  • ময়দা ১ চা চামচ
  • চিনি ১ চা চামচ

সিরার জন্য      

  • চিনি ১ কাপ
  • পানি ৪ কাপ
  • দারুচিনি ১ টুকরা
  • এলাচ ১ টুকরা
নির্দেশনা

১। প্রথমে চুলায় দুধ জ্বাল দিন। ঘন ঘন নাড়ুন।

২। দুধে একবার বলক আসলেই চুলা বন্ধ করে দিয়ে লেবুর রস দিয়ে দুধ ভালো করে নেড়ে দিন।

৩। এখন দুধ ফেটে ছানা ও পানি আলাদা হয়ে গেলে  চুলা থেকে পাত্র নামিয়ে নিন।

৫। এরপর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঝাঁজরির উপর পরিস্কার সুতি কাপড় রেখে ছানা ছেকে ফেলুন।

৬। ছানা ভালো করে ঠাণ্ডা পানিতে ধুয়ে নিন যাতে ছানা থেকে লেবুর টক ভাব পুরোপুরি চলে যায়।

৭। ছানা থেকে পানি ঝরে গেলে কাপড়ে ছানা বেঁধে ৩/৪ ঘণ্টা বাতাসে ঝুলিয়ে রাখুন। ছানায় পানি থাকা যাবেনা,পানি থাকলে রসগোল্লা সিরায় দিলেই খুলে খুলে আসবে।

৮। ৩/৪ ঘণ্টা পর পানি পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে ছানা খুব ভালোকরে হাত দিয়ে মাখিয়ে নিন। ছানা মাখানো যত ভাল হবে মিষ্টি তত সুন্দর হবে, মিষ্টি ফাটবারও কোনও সম্ভাবনা থাকবেনা।

৯। এখন ছানায় ১ চা চামচ ময়দা ও ১ চা চামচ চিনি দিয়ে দিন। ১৫ মিনিট ধরে ছানা মাখুন।

১০। সব ভালোকরে মেখে ছানা ৮-১০ ভাগ করুন। প্রতিটি ভাগকে গোল গোল বল বানিয়ে নিন।

১১। ছানা গোল করতে সমস্যা হলে হাত একবার ধুয়ে শুকিয়ে নিন তারপর গোল করুন অথবা হাতে সামান্য ঘি মেখে নিন।

১২। মিষ্টি বানানোর সময়ই আলাদা পাত্রে সিরার সব উপকরণ একসাথে মিশিয়ে চুলায় বসিয়ে দিন, সিরা একবার ফুটে উঠলে চুলা বন্ধ করে দিন।

১৩। ছানার বল তৈরি হয়ে গেলে সব একসাথে সিরায় ছেড়ে ঢাকনা লাগিয়ে আবার চুলা জ্বালিয়ে দিন।

১৪। প্রথম ১০ মিনিট চুলার জ্বাল বাড়িয়ে দিন এবং পরের ১০ মিনিট জ্বাল মাঝারি রাখুন। মোট ২০ মিনিটের জ্বালে রসগোল্লা ফুলে দিগুণ হয়ে যাবে।

১৫। এই ২০ মিনিট একবারও পাত্রের ঢাকনা তুলবেননা কোনোভাবে মিষ্টি নাড়াচাড়া করবেন না। ২০ মিনিট পর চুলা বন্ধ করে দিন। চুলা থেকে পাত্র নামিয়ে ৫ মিনিট এভাবেই ঢেকে রাখুন।

১৬। রসগোল্লা পুরোপুরি ঠাণ্ডা হবার পর পরিবেশন করুন ।

নোট

** ১  ১/৪ লিটার দুধে সাধারণত ১ কাপের মত ছানা হয়।এটা নির্ভর করে দুধ কেমন তার উপরে।যদি দুধে ফ্যাটের পরিমান বেশি থাকে তাহলে ছানা বেশি পাওয়া যাবে আর ফ্যাটের পরিমান কম হলে ছানা কম হবে।এখন যদি ১ কাপের কাছাকাছি ছানা হয় তাহলে ময়দা এবং চিনি ১ চা চামচ পরিমাণই দিবেন।কিন্তু ছানা ১ কাপ থেকে কম হলে বা ১ কাপের অর্ধেক পরিমান হলে উপরের উপকরনগুলো ১ চা চামচ করে না দিয়ে তখন ১/২ চা চামচ করে দিবেন।**

**ছানা থেকে পানি ঝরানোর জন্য যে ৩ -৪ ঘণ্টা ঝুলিয়ে রাখতে বলা হয়েছে এতেই হবে। এ সময়ের মধ্যেই ছানা থেকে সব পানি ঝরে যাবে।আবার বেশি সময় ধরে ছানা বাতাসে রাখলে ছানা ড্রাই হয়ে যাবার সম্ভাভনা থাকে তখন রসগোল্লা ঠিকমত হবেনা।**

** রসগোল্লার সিরাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ।সিরার ক্ষেত্রে পানি এবং চিনি সবসময় ৪ঃ১ অনুপাতে হবে।অর্থাৎ চিনি ১ কাপ হলে পানি নিতে হবে ৪ কাপ।**

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *